Pancha tatwa:-পঞ্চতত্ব_ভেদকথা
স্রষ্ঠার সর্বত্তম সৃষ্টির আধার এই মানব দেহ ।
এই বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের সমস্ত কিছুর আস্তিত্বিক
অস্তিত্ব নিয়েই মানব দেহখানা সংরচিত ।
আধ্যাত্ব বিজ্ঞানের পঞ্চতত্ব অর্থ্যাৎ ক্ষিতি-অপ
-তেজ-মরূৎ-ব্যোম বা পৃথিবী , জল-অগ্নি-বায়ু- আকাশ বা শব্দ , স্পর্শ , রূপ-রস-গন্ধ প্রভৃতির অস্তিত্বঅতি সুক্ষভাবে দেহাভ্যন্তরে নির্দিষ্ট
স্হানে অবস্থিত আছে ।
দেহাভ্যন্তরে নবলক্ষ গ্রন্থির মধ্যে নাভিদেশে রূদ্রগ্রন্থি ,বক্ষস্থলে বিষ্ণুগ্রন্থি , এবং ভ্রুযুগলের
মধ্যে ব্রহ্মগ্রন্থি নামে তিনটি গ্রন্থি প্রধান।
দেহাভ্যন্তরে গুহ্যমূলে মূলাধারচক্র , লিঙ্গমূলে
স্বাধীষ্ঠানচক্র , নাভিমূলে মনিপুর চক্র ,
হৃদয়ে অনাহত চক্র , কন্ঠে বিশুদ্ধচক্র , এবং ভ্রু-
যুগলের মধ্যে স্থিত আজ্ঞা চক্র নামে ছয়টি চক্রের
মধ্যে মনিপুর চক্রে রূদ্রগ্রন্থি , অনাহত
চক্রে বিষ্ণুগ্রন্থি এবং আজ্ঞা চক্রে ব্রহ্মগ্রন্থি
মুলাধার চক্রে ক্ষিতি বা পৃথ্বি বা গন্ধতত্বের অবস্থান । স্বাধীষ্ঠান চক্রে অপ বা জল বা রসতত্বের
অবস্থান । মনিপুর চক্রে তেজ বা অগ্নি বা রূপতত্বে অবস্থান । অনাহত চক্রে মরূৎ বা বায়ু বা শ্পশ তত্বের অবস্থান । বিশুদ্ধ চক্রে বা আকাশ বা শব্দ তত্বের অবস্থান নিরূপিত হয় । এই পঞ্চতত্বে যে পাঁচটি বীজমন্ত্রের কথা বলা হয়েছে চক্রভেদে তাদের অবস্থান নিম্নরূপ
--
মূলাধার চক্রে ক্ষিতি মহাভুতের অবস্থান
বীজমন্ত্র লং স্বাধীষ্ঠান চক্রে অপ মহাভুতের
অবস্থান বীজমন্ত্র বং মনিপুর চক্রে তেজ
মহাভুতের অবস্থান বীজমন্ত্র রং অনাহত
চক্রে মরূৎ মহাভুতের অবস্থান বীজমন্ত্র
যং বিশুদ্ধ চক্রে ব্যোম মহাভুতের অবস্থান
বীজমন্ত্র হং ।
এতদ্ভিন্ন দেহাভ্যন্তরে গুহ্যমূলে চতুর্দলপদ্ম ,
লিঙ্গমূলে ষড়দলপদ্ম , লিঙ্গের উপরিভাগে
অষ্টদলপদ্ম , নাভিমূলে দশদল পদ্ম ,
নাভির উপরিভাগে কড়ার নিচে দ্বাদশদল পদ্ম ,
বক্ষস্থলে ষোড়সদল পদ্ম , কন্ঠদলে শতদল পদ্ম ,
ভ্রুযুগলের মধ্যে দ্বিদল পদ্ম ,এবং ব্রহ্মতালুতে সহস্রদল পদ্ম নামে নয়টি পদ্ম আছে । সহস্রদল
পদ্মে ব্রহ্মবীজ ওঁ সংস্থিত । মূলাধার চক্রে স্থিত ব্রহ্মগ্রন্থীর মুখে স্বয়ম্ভুলিঙ্গ অবস্থিত । এই
স্বয়ম্ভুলিঙ্গ মূলই দেহের সমস্ত গ্রন্থির উৎসমূল
। সেই স্বয়ম্ভু লিঙ্গ কে সাড়ে তিন প্যাচে বেষ্টন
করে সর্পাকারে কুলকুন্ডলীনি লেজের
অগ্রভাগদ্বারা নিজের মুখ অর্থাৎ ব্রহ্মদ্বার বন্ধ
করতঃ গভীর নিদ্রায় নিমগ্না। এই কুন্ডলিনী সুষুম্না নাড়ী মধ্যে দিয়ে ঊদ্ধমুখী হয়ে পাঁচ ভেদ করে আজ্ঞা বা বিশুদ্ধ চক্রে প্রবেশ করে ।
সাধক স্বীয় সাধনার দ্বারা এই কুলকুন্ডলিনী শক্তিকে জাগ্রত ষঢ়চক্র ভেদ করতঃ আজ্ঞাচক্রের মধ্যে প্রবেশ করতে পারলেই সাধনায় সিদ্ধি নিশ্চিত হয় । এই কুলকুন্ডলিনী শক্তিকে জাগ্রত করাই হচ্ছে সাধকের মূল সাধনা । এই কুলকুন্ডলিনী শক্তিকে জাগ্রত করা ভিন্ন কোন সাধনায়-ই সিদ্ধি লাভ সম্ভব নয়।
এই কুলকুন্ডলিনী শক্তির সহায়তায় সাধক
ঊর্দ্ধরেতা শক্তি সম্পন্ন হয়।ঊর্দ্ধরেতা শক্তি অর্জিত হলে সাধকের দেহের আত্মজ্যোতি বা দিব্যজ্যোতি প্রথমে অভ্যন্তরে , পরে বাহিরে প্রকাশিত হয় । এই
দিব্যজ্যোতি প্রকাশিত হলে সাধকের মনের সমস্ত
কপাট খুলে যায় । সাধক দিব্যদৃষ্টি সম্পন্ন হয় ।
[3/2, 2:28 PM] নাথ ভৈ জয় তরা: ১৷ প্রাণ বায়ু : কন্ঠ থেকে নাভি পর্যন্ত যে বায়ু শ্বাস-প্রশ্বাসের কাজে ব্যস্ত৷
২৷ অপান বায়ু : উদরে নাভির নিম্নাঙ্গে কাজ করে৷ এই বায়ু মলমূত্র বর্জনে সাহায্য করে৷
৩৷ সমান বায়ু : নাভিতে অবস্থান করে প্রাণ ও অপানের মধ্যে সমতা বিধান করে৷
৪৷ উদান বায়ু : কন্ঠ ও শব্দ উচ্চারণকে নিয়ন্ত্রণ করে৷
৫৷ ব্যান বায়ু : সারা দেহে রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে ৷