তুলসীর জন্ম বৃত্তান্তঃ--
তুলসী নামে গোলকে শ্রীকৃষ্ণ প্রিয়া শ্রীরাধিকার এক সহচরী ছিলেন শ্রীরাধিকা তাঁকে মানবযোনি গ্রহণের অভিশাপ দেন । তখন তুলসী শ্রীকৃষ্ণের শরণাপন্ন হন । শ্রীকৃষ্ণ তুলসীকে বললেন যে তুলসী মানব জন্ম গ্রহণ করলে তপস্যা বলে নারায়নের অংশ লাভ করবেন । শাপ হেতু তুলসী জগতে ধর্মরাজ নামে রাজার ও স্ত্রী মাধবী দেবীর কন্যারূপে জন্মগ্রহণ করেন । তুলসী অতুলনীয় রূপ লাবণ্যের অধিকারিণী হন । পরে তুলসী বনে গিয়ে ব্রহ্মার তপস্যায় নিমগ্ন হন । ধ্যানে ব্রহ্মা খুব সস্তুষ্ট হন ও তুলসীকে অভীষ্ট বর প্রার্থনা করতে বলেন । তুলসী নারায়ণকে পতিরূপে লাভের বর প্রার্থনা করেন । ব্রহ্মা বললেন যে তুলসী দানবরূপী শঙ্খচূড়কে বিবাহ করলেই নারায়ণ প্রাপ্তি সম্ভব হবে । নারায়ণের আর্শিবাদে তুলসীর বৃক্ষরূপে জন্ম হবে বিশ্বপাবকে ও পুজা পাবেন । তুলসী ব্যতীত নারায়ণ পূজা বিফল হবে ।
তদনুসারে শঙ্খচূড়ের সাথে তুলসীর বিবাহ হয় । শঙ্খচূড় স্বর্গরাজ্য অদিকার করে । তুলসীর সতীত্ব হানি না হলে শঙ্খচূড় পরাজিত হবে না ও স্বর্গরাজ্য্ও উদ্ধার সম্ভব হবে না । নারায়ণ স্বয়ং শঙ্খচূড়ের বেশে তুলসীর সতীত্ব হানি করেন তারপর শঙ্খচূড় নিহত হয় । তুলসী তা টের পেয়ে নারায়ণকে পাষাণ হওয়ার অভিশাপ দেন । ফলে নারায়ণ পাষাণ হয়(যাকে নারায়ণ শিলা বা শালগ্রাম শিলা বলা হয়) । নারীরর সতীত্ব অসাধারণ শক্তির উৎস । শাস্ত্রে তার বহু দৃষ্টান্ত রয়েছে । স্বামীর মৃত্যুতে তুলসী নারায়ণের চরণে পতিত হয়ে কাঁদতে আরম্ভ করলেন । তখন নারায়ণ তুলসীকে বললেন তুলসীর এ দেহ ত্যাগে লক্ষ্মী সদৃশী নারায়নের প্রিয়া হবেন । নারায়ণের বরে তুলসীর এ দেহ গণ্ডকী নদী ও কেশদাম তুলসী বৃক্ষরূপে জন্মগ্রহণ করেন । তদবধি নারায়ণ শিলারূপে আবহন ও সর্ব্বদা তুলসী যুক্ত থাকেন । তুলসী ব্যতীত নারায়ণ পূজা হয় না ।
★শাস্ত্রমতে তুলসীর মাহাত্ম্যঃ--
তুলসী কার্ত্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে ধরাতলে তরুরূপে জন্মগ্রহণ করেন । কার্ত্তিক মাসে তুলসীপাতা দিয়ে যাঁরা নারায়ণ পূজা করেন এবং দর্শন, স্পর্শন, ধ্যান, প্রণাম, অর্চ্চন, রোপন ও সেবন করেন, তাঁরা কোটি সহস্র যুগ হরিগৃহে বাস করেন । যাঁরা তুলসীবৃক্ষ রোপন করেন, এবৃক্ষের মূল যতবিস্তৃত হতে থাকে,তত যুগ সহস্র পরিমাণ তাঁদের পুন্য বির্স্তৃত হতে থাকে । তুলসী পাতা দিয়ে যিনি নারায়ণ পূজা করেন, তাঁর জন্মার্জ্জিত পাতক বিনষ্ট হয় । বায়ু তুলসী গন্ধ নিয়ে যে দিকে প্রবাহিত হয়, সেদিক প্রবাহিত হয়।
🙏🏻🙏🏻হরে কৃষ্ণ 🙏🏻🙏🏻