ভগবানের ষড় ঐশ্বর্য কি কি?
ভগবানের ষড় ঐশ্বর্য হল—ঈশ্বরত্ব, শক্তি, যশ, শ্রী, জ্ঞান ও বৈরাগ্য।
ঈশ্বরত্ব বলতে সমস্ত ক্লেশমুক্ত চৈতন্য সত্তাকেই বােঝায়। শুদ্ধ চৈতন্যই হল
ঈশ্বরত্ব। ভগবানের শক্তি বলতে আনন্দকেই বােঝায়। তাই সমগ্র জীব নিজ
নিজ আনন্দের পিছনেই ছুটতে। প্রত্যেকে যা করছে আনন্দ পাওয়ার জন্যই
করছে। অর্থাৎ আনন্দ শক্তি দ্বারাই সমস্ত জীব মােহিত হয়ে আছে। ভগবান
এই আনন্দ শক্তি দ্বারাই সকলকে মােহিত করে রেখেছে। তাই সাধারণরা
বিষয়ানন্দের পিছনে ছুটছে, সাধকরা ভজনানন্দ নিয়ে আছে এবং সিদ্ধরা
ব্রহ্মানন্দে বিরাজ করছে। ভগবানের যশ হল তার সমগ্র বিশ্বরূপ। সমগ্র
ব্রহ্মাণ্ডই হল ব্রহ্মের ঐশ্বর্য বা যশ। শ্রী হল তার সৌন্দর্য। জ্ঞান বলতে অখণ্ড
বােধকেই বােঝায়। যে অবস্থায় সর্ব বস্তুতে ভগবানের দর্শন হয়, তাকেই
প্রকৃত জ্ঞান লাভ বলে। ভগবান তার সাম্য বা সমজ্ঞানেই জগৎ চালাচ্ছেন।
জীবের আধারের তারতম্য অনুযায়ী তার প্রতিফলন ঘটছে। যেমনি সূর্যের
আলাে সর্ব বস্তুতে সমভাবে পড়লেও মাটি, জল ও কাঁচে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিফলন
হয়, ঠিক তেমনি সমজ্ঞানের প্রকাশই ভগবানের ঐশ্বর্য। ভগবান সর্ব বস্তুতে ওতপ্রােত হলেও সর্বদা নির্লিপ্ত হয়ে বিরাজ করছেন, যাকে বৈরাগ্য বলে।
তাই গীতায় ভগবান বলেছেন—সব কিছু আমাতে থাকলেও—আমি কিছুতে
নেই। ইহাই তার বৈরাগ্যের ঐশ্বর্য। যে ভক্ত ভগবানকে লাভ করে, তার
মধ্যে ভগবানের এই ছয়টি গুণ ফুটে ওঠে।
(দিব্যবন্ধু)