সাধারণের সাধনা
সাধারণ মানুষের মন সর্বদা বিষয়ের দিকেই ছােটে। তাই মন ভগবানে।
থাকে না। প্রথম অবস্থায় সাধকের মন এইভাবেই চঞ্চল থাকে। সেইজন্যে
প্রথম অবস্থায় খুব গুরু ও সাধুসঙ্গের প্রয়ােজন। কেননা গুরুর কাছে গেলে
মন ভদ্র থাকে। আর গুরুর কাছে থেকে সরে গেলে মন আবার বিষয়ে।
ধাবিত হয়। তাই প্রথম অবস্থায় খুব গুরুসঙ্গের প্রয়ােজন। কিন্তু কেবল গুরুর
সঙ্গে থাকলেই হবে না, গুরুর নির্দেশ মতাে নিজেকে সংশােধন করতে হবে।
গুরু যে দোষ-ক্রটিগুলি ধরিয়ে দেবেন, তাকে শােধন করার চেষ্টা করতে
হবে। সবচেয়ে বড় কথা প্রথম অবস্থায় নিয়মানুবর্তিতা খুবই প্রয়ােজন। কেননা
স্বেচ্ছাচারী জীবন কখনও ভগবমুখী থাকে না। তাই গুরুর প্রতি খুব শ্রদ্ধার
প্রয়ােজন। গুরুকে মানুষ ভাবলে হবে না, গুরুকে মানুষ ভাবলে কেবল তার
দোষ-ত্রুটি ধরা পড়বে এবং মনে সংশয়-সন্দেহ দেখা দেবে। ভগবান নানাভাবে
তােমার পরীক্ষা নেবেন। তাই চালাকি ও বিতর্ক বুদ্ধি ছেড়ে শরণাগত হতে
হবে। শ্রদ্ধা থেকেই ক্রমে নিষ্ঠা ও নিষ্ঠা থেকেই ক্রমে শরণাগতি বা রুচি
আসে। তাই প্রবর্তক বা সাধারণ অবস্থায় শ্রদ্ধা ও নিষ্ঠা দিয়ে শুরু করতে
হবে। প্রথম অবস্থায় গুরুসঙ্গ, গুরুমন্ত্র, আর গুরুর প্রতি নিষ্কাম ভালবাসা
দিয়ে চলার পথ শুরু করতে হবে। এতে মনের বাহ্য প্রবৃত্তি কমে গিয়ে
ভগবানে মতি বাড়তে থাকে। আসলে প্রথম অবস্থায় বিক্ষিপ্ত মনকে হৃদয়স্থ
ভগবানে অন্তরমুখী করে তােলার জন্যই উপরিউক্ত সাধনা দিয়ে শুরু করতে
হয়।
(দিব্যবন্ধু)