★★অঘোরী★★
..………….…..
![]() |
অঘোর সাধুদের সাধনা,Aghor sadhur life style, |
প্রথমেই ভাবতে হয় ‘অঘোরী’ শব্দটিকে নিয়ে। এই শব্দের উৎসে রয়েছে ‘অঘোর’ শব্দটি। এর অর্থ -- মানসিক অন্ধকারের বিলয় বা 'ঘোর' যা কামনা/বাসনার অন্ত ও অষ্টপাশ মুক্ত। আবার এই শব্দটি ভয়হীনতাকেও বোঝায়। কিন্তু অঘোরীদের বেশিরভাগ আচারই সাধারণ মানুষের ভীতি উদ্রেককারী। অঘোরীরা বিশ্বাস করেন শিবের বৈনাশিক রূপে। এক তীব্র শৈব ভাবনা থেকে তাঁরা শিবানুসারী জীবনযাপনে উদ্যোগী হন। শ্মশানবাস তার মধ্যে প্রধান। নরকপাল সঙ্গে রাখা, চিতাভস্ম গায়ে মাখা, ভালো, পঁচা, নোংরা খাবারে অভ্যস্ত হয়ে ওঠা বস্তুতপক্ষে ইন্দ্রিয়জয়েরই একটি দিক। অঘোরী সাধুরা মৃতদেহ ভক্ষণ, মূত্রপান ইত্যাদি অভ্যাস করেন। ১৭ শতকের সন্ন্যাসী বাবা কিনারামের সূত্রেই এই আচারগুলি অঘোরীদের কাল্টে প্রবেশ করেছে বলে জানা যায়। এর বাইরে অঘোরীরা নিয়মিত শবসাধনা করে থাকেন। মৃতদেহ থেকে হাড় ছাড়িয়ে তা নিজেদের শরীরে ধারণ করেন, সঙ্গে রাখেন। নরকপাল তাঁদের কাছে একান্ত প্রয়োজনীয় এক সামগ্রী। এটিকে অনেক সময়েই তাঁরা পানপাত্র হিসেবে ব্যবহার করেন। অঘোরীদের এই আচারগুলির পিছনে সবথেকে বড় যুক্তিটি হল, কত কম উপকরণে জীবনধারণ করা যায়, তার অভ্যাস রাখা। এই যুক্তিতে তাঁরা প্রায়শই নগ্ন থাকেন। নগ্নতার সপক্ষে আর একটি যুক্তি হল এই -- প্রকৃতি থেকে দূরে সরতে রাজি নন তাঁরা। মদ্যপান, গঞ্জিকা সেবন ইত্যাদিকে অঘোরীরা সাধনার অপরিহার্য অঙ্গ বলে মনে করেন। অঘোরীদের এই অদ্ভুত আচরণ তাঁদের সম্পর্কে বিস্তর কিংবন্তির জন্ম দিয়েছে। অনেকেরই বিশ্বাস, অঘোরীরা কালো জাদুতে পারদর্শী। অথবা তাঁদের অতিলৌকিক ক্ষমতা বর্তমান। আসলে কোনও অতিলৌকিকতা প্রদর্শন অঘোরীদের লক্ষ্য নয়। তাঁদের একমাত্র উদ্দেশ্য মোক্ষলাভ, অর্থাৎ জীবন ও মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তিলাভ।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার- রতন কর্মকার-বাংলাদেশ ঢাকা,