দুর্গেশনন্দিনী দেবী দুর্গাঃ----
![]() |
দেবী দুর্গেশনন্দিনী |
🍁ভগবান বিষ্ণুর মায়া শক্তির একটি রূপ দেবীদুর্গা। দুর্গ বা কারাগার সদৃশ এই জড় জগতের যিনি কর্তা তিনি হলেন দুর্গা।আবার অসুর বিনাসিনী দেবী দুর্গাকে মর্তলোকবাসী মাতৃরূপে বন্দনা করেন বলে তিনি জগজ্জননী। তিনি জীবের দুর্গতি নাশ করেন তাই তিনি দুর্গতিনাশিনী। তিনি কিভাবে জীবের দুর্গতি নাশ করেন। দুর্গতি বলতে শুধু কি জীবের দুঃখ দুর্দশাকেই বোঝানো হয়ে থাকে? শাস্ত্রে এই জড় জগৎকে বলা হয়েছে দুঃখালয়ম্ অশাশ্বতম্ অর্থাৎ দুঃখের আলয়। উদাহরণস্বরূপ স্বর্ণালয়ে গেলে যেমন স্বর্ণ পাওয়া যায়, বাসনালয়ে গেলে যেমন বাসনপত্র পাওয়া যায়, আবার বস্ত্রালয়ে গেলে যেমন বস্ত্র পাওয়া যায়, তদ্রুপ দুঃখালয় নামক জড় জগতে পতিত হলে জীবের দুঃখ পাওয়াটাই স্বাভাবিক। তাই জীবের প্রকৃত দুঃখ হচ্ছে এই দুঃখময় জড় জগতে পতিত হওয়া। অর্থাৎ এই জড় জগতটাই হচ্ছে দুঃখের আলয়। আর জীব যখন এই দুংখময় জড় জগতে পতিত হয় তখনই সে দুংখ দুর্দশা ভোগ করতে থাকে।
🍁এই জড় জগতে কেউই সুখি নয়। প্রত্যেকে কোন না কোনভাবে দুঃখ কষ্ট ভোগ করছে।যার কারণে এই জড় জগতকে কারাগারের সাথে তুলনা করা হয়েছে। কারাগারে তারাই থাকে যারা রাজা বা প্রজাতন্ত্রের আইন মানে না। তদ্রুপ যারা ভগবানের আইন অমান্য করে তাদেরকে ভগবান দন্ডস্বরূপ কারাগার সদৃশ এই জড় জগতে প্রেরণ করেন। আর ভগবানের বহিরঙ্গা মায়া শক্তি অর্থাৎ দুর্গা দেবী ভগবানের নির্দেশে তাদের দন্ড দান করেন। তাই দুর্গাদেবী কৃষ্ণ বিমুখ ব্যক্তিদের শাস্তি প্রদান করেন আর সাধু সজ্জন ব্যক্তিদের কৃপা আর্শিবাদ দান করেন। জেল খানায় লেখা থাকে,রাখিব নিরাপদ দেখাব আলোর পথ।'কয়েদিকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয় শুধু শাস্তি প্রদানের জন্য নয়।নিজেকে শুধরিয়ে পরিশুদ্ধ করার জন্যও। যাতে করে অপরাধী নিজের অপরাধ শুধরে নিয়ে পরবর্তী জীবনটা সুন্দর এবং সুশৃঙ্খলভাবে অতিবাহিত করতে পারে।তাই এই জড় জগতে আমরা যারা পতিত হয়েছি আমাদের অবস্থা ঠিক জেলখানার কয়েদিদের মতই।
🍁আর দুর্গাদেবীর কার্য হচ্ছে দুর্জন ব্যাক্তিদের দন্ড দানের মাধ্যমে তাদেরকে পরিশুদ্ধ করে ভগবানের সাথে হারিয়ে যাওয়া সম্পর্ক পুনঃপ্রতিস্থাপনের সুযোগ করে দেওয়া । যাতে করে তারা অন্তিমে ভগবানকে স্মরণ করার মাধ্যমে জড় জাগতিক দুঃখ দুর্দশা থেকে মুক্তি লাভের সৌভাগ্য অর্জন করতে পারে। তারপরও যদি কেউ নিজেকে শুধরাতে না পারে তবে দুর্গাদেবী দুর্গতি নাশের পরিবর্তে তাদেরকে দুর্গতি প্রদানই করেন বটে।
🍁বছর ঘুরে দেবী আসছেন মর্তলোকে ভক্তকুলে। তাঁকে যদি আমরা শুদ্ধ সাত্ত্বিকভাবে আমন্ত্রণ না করি তবে তিনি আমাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হবেন। যার বদৌলতে ধরা হবে জরা আর অশান্তিতে পরিপুষ্ট।তাই মাকে শুদ্ধ ও সাত্ত্বিক মনে আমন্ত্রণ করি পূণ্য ধরায়।
🙏জয় গুরু মহারাজ 🙏