Type Here to Get Search Results !

   Choose Your Language   

সাধনায় সাধকের অনুভব, শ্রী শ্রী নিগমানন্দ ঠাকুর,

 নিগমানন্দদর্শনঃ---


...............


শ্রী শ্রী নিগমানন্দ ঠাকুর 



নিগমানন্দদর্শনের সুত্র তাঁর শ্রীমুখনিঃসৃত “শঙ্করের মত ও গৌরাঙ্গের পথ”। প্রত্যেক সিদ্ধ মহাপুরুষই নিজ নিজ মত ও পথের কথা বলে গেছেন। বুদ্ধদেবের “অহিংসা পরম ধর্ম” শঙ্করাচায়ের “ব্রক্ষ্ম সত্য জগন্মিথ্যা” গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর “নামে রুচি জীবে দয়া” রামকৃষ্ণ পরমহংসের “যত মত তত পথ” এর পরে নিগমানন্দ বললেন- ‘শঙ্করের মত গৌরাঙ্গের পথ’। আচার্য শঙ্করের মত বা লক্ষ অদ্বৈত ব্রক্ষ্ম জ্ঞান লাভ। তার মত খুবই উদার এবং সর্বাবগাহী। কিন্তু সেই মত বা লক্ষে পৌছানোর জন্য তিনি যে পথের নিদ্দের্শ দিয়েছেন তা যেমন দুর্গম তেমনি সঙ্কীর্ণ। একমাত্র ব্রাক্ষ্মন দেহে কঠোর বৈদিক সন্নাসযোগের দ্বারাই সে পথে যাওয়া যায়। তার জন্য প্রয়োজন দুশ্চর ব্রক্ষ্মচার্য, কঠোর ত্যাগ-সংযম, আগ্র্যাবিচার, বুদ্ধি, শুদ্ধ বিবেক-বৈরাগ্য। এমন অধিকারী খুবই দুলর্ভ। আবার গৌরাঙ্গের পথ খুবই উদার ও প্রশস্ত। ব্রক্ষ্মন, চন্ডাল, পন্ডিত মূর্খ সকলের পক্ষে সেই পথে সহজে বিচরন সম্ভব। অবিচল বিশ্বাস ও চোখের জল কে পথেয় করে আপামর সাধারনের জন্য তিনি ভক্তির পথ, সেবার পথ, ভালবাসার পথের কথা বলে গেছেন। কিন্তু তার মত ছিল সঙ্কীর্ণঃ তাঁর মতে, শ্রী রাধাকৃষ্ণের যুগল আরাধনাই জীবের সাধ্য। কিন্তু যারা রাধাকৃষ্ণ ছাড়া ভগবানের অন্য ব্যক্ত ও অব্যক্ত রূপের উপসনা করে তাদের কী গতি হবে?


এই সব ভেবে চিন্তে নিগমানন্দ শঙ্করের উদার মত গ্রহন করেছেন, তাঁর সঙ্কীর্ণ পথ বর্জন করেছেন, আবার গৌরাঙ্গের অনুদার মত বর্জন করেছেন, তার উদার পথ গ্রহন করেছেন। তিনি শঙ্করের মত ও গৌরাঙ্গের পথ বলতে ভক্তিপথে অদ্বৈত জ্ঞান লাভের কথা বলতে চেয়েছেন।


ভক্তি প্রীতি শ্রদ্ধা সেবা সম্বল করে নির্গুন গুরুব্রক্ষ্মের ধ্যানে তন্ময় হতে হবে। তাই সদগুরুর অমোঘ ঘোষনা-‘অদ্বৈত জ্ঞানলাভের দুটি পথ এক কঠোর সন্ন্যাস যোগ, অপর ব্রক্ষ্মবিদ্ গুরুর সেবা। কঠোর সন্ন্যাস যোগ অবলম্বন সাধারনের পক্ষে অসম্ভব- সুগম পন্থা ব্রক্ষ্মবিদ গুরুর সেবা তার প্রতি ভক্তি বিশ্বাস, শ্রদ্ধা ভালবাসা এবং প্রতিজনক কর্মে আত্ম সমার্পন। ব্রক্ষ্মবিদ গুরুর সেবা-পুজা ও ভালবাসায় ব্যক্তিত্ব বিসর্জন করিলে ব্রক্ষ্মনির্বান লাভ করা যায়। ব্রক্ষ্মনির্বান লাভ হ’ল শঙ্করের মত- ব্রক্ষ্মবিদ্  গুরুর সেবা হল ভক্তি বিশ্বাস শ্রদ্ধা প্রীতির অনুশীলনের পথ, গৌরাঙ্গের পথ। ব্রক্ষ্মজ্ঞান লাভ যেমন শাঙ্কর সার্বভৌম উদার মত, তেমনি গৃহীত্যাগী নির্বিশেষে গুরুসেবার পথ হল গৌরাঙ্গীয় সার্বভৌম উদার পথ।


সংক্ষেপে এই হল নিগমানন্দদর্শন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.