শাস্ত্রানুসারে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছা ছাড়া একটি তৃণও নড়ে না। তবে আমাদের সমস্ত কর্ম তার ইচ্ছাতেই হচ্ছে, তাহলে কর্মফল ভুগতে হবে কেনঃ
....….................…..
![]() |
Lord Krishna - Shrimad Bhagwat Geeta |
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অধ্যক্ষতায় প্রকৃতির দ্বারা ক্রিয়াকলাপ, পরিচালিত হলেও আমাদের জন্য শ্রীকৃৃষ্ণ স্বতত্র ইচ্ছা শক্তি দান করেছেন। এবং সেই ইচ্ছা অনুসারে আমরা জীবন গঠন করতে পারে। আমাদের কিভাবে জীবন গঠন করতে হবে, সেই সব নির্দেশও দিয়েছেন। অর্থাৎ এমন নয় যে, আমি পাগলের মতো যা ইচ্ছা তাই -ই করে চলব, আর মনে করতে থাকব যে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছতেই আমি সব কিছু করছি। না এরূপ মনে করা কখনই ঠিক নয়
ভগবান শ্রীকৃৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছেন। হে রাজন, আমি তোমাকে ভালোমন্দ সব কিছুই বললাম, এখন তোমার যা ইচ্ছা হয় তাই করো। তুমি আমার কথামতো যুদ্ধ করতে পারো, কিংবা আমার কথা এড়িয়ে নিজের মতে চলতে পারো, এটা তোমার ইচ্ছা।
আমরা যদি কৃ্ষ্ণনুগামী হই তবে আমরা জোর, দিয়েই বলতে পারব যা কিছুই হচ্ছে সবই কৃৃষ্ণকৃপা। কিন্তু যদি কৃৃষ্ণবিমুখ স্বভাব হই, আমাদের সব কর্মের ফল ভোগ করতে আমরা বাধ্য হব, এবং এই জন্ম, মৃত্যু সংসার চক্রে ঘুরপাক খাব।
শ্রীকৃৃষ্ণসংহিতাঃ (২ / ২০ - ২১) শাস্ত্রে বলা হয়েছেঃ
স্বাতন্ত্র্য বর্তমানেহপি জীবনাং ভদ্রকাঙ্ক্ষিণাম ।
শক্তয়োহনুগতাঃ শাশ্বৎ কৃষ্ণেচ্ছায়াঃ স্বভাবতঃ।।
যে তু ভোগরতা মূঢ়ান্তে স্বশক্তিপরায়ণাঃ।
ভ্রমন্তি কর্মমার্গেষু প্রপঞ্চে দুর্নিবারিতে।
অনুবাদঃ প্রত্যেক জীবকে ভগবান স্বাতস্ত্র্য প্রদান করেছেন। তারা নিজ নিজ ইচ্ছা অনুসারে পরিচালিত হওয়ার সীমিত স্বাধীনতা লাভ করেছে। যারা মঙ্গল আকাঙ্ক্ষী, হিতাহিত, জ্ঞানহীন তাদরে ইচ্ছাশক্তি ভগবানের ইচ্ছাশক্তির অনুগত হয় না, তারা চিৎশক্তি বিরোধী হয়ে জগতে বিচরণ করে থাকে। তারা এই প্রপঞ্চকে (জড় জগৎকে) আশ্রয় করে দুর্নিবারভাবে কর্মমার্গে ভ্রমণ করতে থাকে।
আমরা কৃ্ষ্ণবিমুখ মানসিকতার ফলেই এই জড় জগতে, পতিত নানা বিধ কর্মফলে সুখ দুঃখ ভোগ করছি। আমাদের স্বতস্ত্র ইচ্ছাকে যদি কৃষ্ণ, উস্মক্ত করি তবে কৃৃষ্ণকৃপায় আমরা জরজাগতিক সমগ্র সুখ দুখ, পাপ পূর্ণ্যে উর্ধ্বে গিয় নিত্য আনন্দময় জীবনে পৌছবে পারবে। সেটাই করে চলতে হবে। তাই বলা হয়েছে, যেন তেন প্রকারেণ কৃৃষ্ণ মনঃ নিবেশয়ঃ। যে কোনওভাবেই হোক আমাদের মনটাকে।
কৃৃষ্ণপাদপদ্মে নিয়োজিত করতে হবে। এই কর্তব্যটুকু এড়িয়ে গিয়ে অন্যান্য উদ্ভট কারণ দেখিয়ে, আমি যা করছি ভগবানই করাচ্ছেন। কিংবা আমি সেদিনই ভগবানকে ডাকব যেদিন ভগবান আমাকে কৃপা করবেন। আমি নতুবা ডাকতেই পারি না, এই রকমের কথার অর্থ হচ্ছে আপন দোষ বাদ দিয়ে দোষারোপ করা। ভগবান নিজে এসে আমাকে তোষামোদ করুক, তাহলে আমি সারা দিতে পারি, এটা হচ্ছে অভক্তের প্রলাপ, আমরা যদি আমাদের জীবনের মঙ্গল চাই, তবে আমাদের ইচ্ছা শক্তিকে শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছার অনুগামী করতে হবে, শ্রীকৃৃষ্ণ চান, মন্মনা ভদ্ভক্ত, আমাতে মন রাখ, আমার ভক্ত হও। অতএব আমাদের তার প্রতি মন রেখে ভক্তি নিষ্ঠায় যুক্ত হতে হবে। তাহলে ভক্তের দায়িত্ব তার উপর বর্তাবে।
🙏🙏🙏🙏হরে কৃষ্ণ🙏🙏🙏🙏