Type Here to Get Search Results !

   Choose Your Language   

When is the emergence of crazy?,কবে হয় ভবা পাগলার আর্বিভাব তিথি?,

 💥 ভবের ভব কাণ্ডারী শ্রীশ্রী ভবা পাগলের আবির্ভাব তিথিতে অভুমি ভূলুণ্ঠিত প্রণাম জানাই🙏🏻🙏🏻

জয় ভবা পাগলা





শ্রীশ্রীভবাপাগলা-----


* বাংলা ১৩৮৯ সালের (ইং ১৯৮২ সালের ২৫শে মার্চ) প্রসন্ন সকাল। ভারত বিখ্যাত মহাসাধক শ্রীশ্রীভবাপাগলা পরম ব্রহ্মক্ষেত্র মহাপীঠ তারাপীঠে এলেন। তাঁর সাথে কয়েকজন শিষ্যভক্ত। সিড়ি দিয়ে মায়ের মন্দিরে উঠছেন। হঠাৎ একটি বালিকা তার কোলে ঝাপিয়ে পড়লাে। বালিকা শ্যামবর্ণা, পরণে একটি

ছােট্ট লাল পেড়ে কাপড় – যেমন পাণ্ডাদের মেয়েদের থাকে।


* বালিকাটির সুদীর্ঘ ঘন কালাে কেশপাশ এত গভীর যে তার মুখমণ্ডল কেউ দেখতে পাচ্ছে না। ঘন কালাে চুলে মুখ ঢেকে গেছে। পরম সিদ্ধ মাতৃসাধক ভবাপাগলা মহানন্দে বিহুল হয়ে রয়েছেন। একটু পরে বালিকাটি কোল থেকে উঠে এত দ্রুত চলে গেল যে উপস্থিত ভক্তবৃন্দ ভাল করে মেয়েটির শ্রীমুখ পর্যন্ত দর্শন করতে পারলেন না। সবাই বিস্মিত হলেন। ভবাপাগলা কিন্তু আনন্দে টলমল করছেন। তার দু’নয়নে আনন্দের ধারা। ধীরে ধীরে আনন্দ ভরে মন্দিরে উঠে এলেন। ত্রিলােকেশ্বরী তারাপীঠেশ্বরী তারামায়ের ভােগমূর্তিকে দর্শন করলেন। তারপর সংগীতের অঞ্জলী দিয়ে তারামায়ের দিব্যপূজা করলেন।


* মহাপীঠ তারাপীঠে প্রবেশের সাথে সাথেই ত্রিলােকজননী তারামা যাঁকে দর্শন দিলেন এবং বালিকা কন্যারূপে যার কোলে ঝাপিয়ে পড়লেন সেই পরম সৌভাগ্যবান মহান মাতৃসাধকের ঐশীনির্দিষ্ট মহাজীবনও সর্বতােভাবে মাতৃকৃপাধন্য ও মাতৃস্নেহধারায় নিত্য অভিশিক্ত। এই মহান মাতৃসাধকের আবির্ভাব, সাধন ও সিদ্ধি সবই মহাবিস্ময়কর। মাতৃনাম ও মাতৃলীলা প্রচারে ও প্রসারে তাঁর অপার্থিব শক্তি ও অতুলনীয় সংগঠন শক্তি মহাবিস্ময়ের সৃষ্টি করে। তার অলৌকিক যােগবিভূতিও অগণিত ভক্তবৃন্দের কাছে পরম আশীর্বাদরূপে উপস্থিত হয়েছে বার বার। সংগীতই তার ধ্যান জ্ঞান, সংগীতই তার মন্ত্র, পূজা, সংগীতই তার প্রাণ ও সাধনা।


* এই মহাপুরুষের আবির্ভাব ঘটে পূর্ববঙ্গের ঢাকা জেলার আমতা গ্রামে। বাংলা ১৩০৯ সন, শুক্রবার, কোজাগরী পূর্ণিমা তিথিতে। তার জন্মের পূর্ব থেকেই শুরু হয় ভবাপাগলার অলৌকিক লীলা। গর্ভাবস্থায় ভবাপাগলার মাতৃদেবী অসুস্থা। ডাক্তার পরামর্শ দিলেন গর্ভস্থ শিশুকে মেরে ফেললে তবে প্রসূতি বাঁচতে পারেন। ডাক্তারের কথা শেষ হতেই গর্ভস্থ শিশু সহসা খিল খিল করে হেসে উঠলাে। গর্ভবতী গয়াসুন্দরী দেবী তা শুনে মহাবিস্ময়ে সবাইকে তা বললেন। তাই গর্ভ নষ্ট করা হ’ল না।


* যথাকালে মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ট হয়েই সদ্যজাত শিশু কথা বলে উঠলাে। সবাই মহাবিস্ময়ে স্তম্ভিত। যথাসময়ে শিশুর নাম রাখা হ’ল ভবেন্দ্র। ভবেন্দ্র থেকে ভবা। পিতা গজেন্দ্র চৌধুরী ও মাতা গয়াসুন্দরী দেবীর কনিষ্ঠ পুত্র হলেন ভবা।


* শিশু ভবাকে কেন্দ্র করে একের পর এক অলৌকিক ঘটনা ঘটতে থাকে। মাত্র পাঁচ বছর বয়স থেকেই ভবা অবিরাম গান রচনা করে ইষ্টদেবী আনন্দময়ী কালীকে গেয়ে শােনাতে লাগলেন। এই অলৌকিক ব্যাপার দেখে সবাই মহাবিস্মিত। জন্মসিদ্ধ এই মাতৃসাধক বালকের নাম মন্ত্র জপ ধ্যান পূজো সবই গান। এই দিব্য মধুর গানই তার নিত্য অর্ঘ্য প্রাণাধিক ইষ্টদেবীর চরণ কমলে। এই সময় এই বালক সংগীতসাধককে ঘিরে ঘটতে থাকে নানান অলৌকিক লীলা।


* ভবার বয়স যখন তের বছর তখন ভবা কলকাতায় (৪নং কৃপানাথ লেন) রয়েছেন বিচিত্র ঐশীনির্দিষ্ট হয়ে। এই সময় এক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে।


* একদিন ১৩২২ সনে জননী গয়াদেবী তার দ্বিতীয় পুত্র বালক ‘ভবা’র মুখে যা খুশি তাই বলা থেকে সংযত হ’বার জন্য শাস্তি দিতে মনস্থ করলেন। ঘরের দরজা বন্ধ করে ভবাকে শাস্তি দিতে এগিয়ে এলেন। ঘরে একটি মাত্র জানলা রয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে বালক ভবা অলৌকিকভাবে জানলার শিকের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে গিয়ে জননী গয়াদেবীকে বললেন, “মার দেখি মা। মনে রেখ মা, জন্মেই যে কথা কয়, সে ছেলে মনুষ্য নয়।” এই কথা বলে অলৌকিক শক্তিধর বালক বাড়ী থেকে চলে গেল। মাকে কাঁদিয়ে

তিনদিন পর বাড়ী ফিরলাে। এর কিছুকাল পর বাগবাজারে শ্রীমায়ের বাড়ীতে শ্রীরামকৃষ্ণজায়া ও শ্রীরামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সংঘজননী শ্রীশ্রীমা সারদামণির দর্শন লাভ করলাে কিশাের ভবা। তখন তার বয়স চৌদ্দ বছর। মহাসাধিকা পাগলী মা ভবাকে নিয়ে এলেন।

* জন্মসিদ্ধ কিশাের ভবা পাগলা জগৎজননী আনন্দময়ী শ্যামামায়ের জীবন্ত বিগ্রহ রূপে মা সারদামণিকে দর্শন করলেন। মাকে সহাস্যে প্রশ্ন করলাে কিশাের ভবা পাগলা, “মা, তােমাকে প্রথম কে ‘মা’ বলে ডেকেছিল ?

* ‘মা’ ডাকাটা তুমি শেখালে, না আর কেউ শুরু

করেছিল?” কিশাের ভবার এই নিগূঢ় তাৎপর্যমণ্ডিত প্রশ্ন যথার্থ বিস্ময়কর। সৃষ্টির মূল চাবিকাঠি এই প্রশ্নের মাঝে আছে। যে মা’ অনাদি অনন্ত। তার পূর্বে কে ছিলেন? কে তাকে মা বললেন? মা সারদামণি কিশাের ভবাকে যথেষ্ট স্নেহ ভালবাসা দিয়ে কাছে টেনে নিলেন। সস্নেহে কোলে বসিয়ে হাত ভরে ছানা, মিছরি, ভিজানাে ছােলা প্রভৃতি খাওয়ালেন।


* কিশাের ভবা পাগলা মা সারদামণিকে অজস্র গান শােনালেন। মা-ও সানন্দে বললেন কত কথা। এমনি ভাবে প্রায় দীর্ঘ এক বছর কিশাের ভবা মা’র দিব্য সান্নিধ্য লাভ করলেন। একদিন (১৩২৪ সন) এই মাতৃসাধক কিশাের ভবা পাগলাকে প্রায় চৌষট্টি বছর বয়স্কা বৃদ্ধা মা সারদামণি প্রসন্ন গম্ভীর

স্বরে নিভৃতে জিজ্ঞেস করলেন, “ঠাকুর দেহ রাখবার পূর্বে আমাকে বলেছিলেন, পঞ্চান্ন বছর পর তিনি হয়তাে পূর্ববঙ্গে আবার আসবেন। তুমিই কি সেই?” কিশাের ভবা মৃদু হাসলেন। শ্রীশ্রীমা সারদামণির উপরােক্ত উক্তি প্রমাণ করে যে তিনি এই কিশাের ভবাপাগলাকে কি গভীর উচ্চভাব নিয়ে প্রত্যক্ষ করেছেন।

আরেকদিন মা সারদামণি কিশাের ভবাকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি ঠাকুরের কথা শুনেছ? কেমন লাগে তােমার তাকে?” কিশাের ভবাপাগলা উত্তর দিলেন, “ভাল লাগে না পরমহংসদেবকে। টাকা মাটি, মাটি টাকা বলে টাকা জলে ফেলে।

দিলেন। গরীব দুঃখীদের দিলে পারতেন।” ভবাপাগলা মা সারদামণিকে শােনালেন তার ছয় বছর বয়সের রচনা প্রভাতী সংগীত।

“এস মা কালী, মা বলি আমার প্রাণের বেদনা লাগে না ভাল কি যে করি তুমি আমায় বল না। ভাবিয়া ভাবিয়া হতেছি সারা এস এস মা তারা,

তুমি বিনে আর কেউ নেই আমার দগ্ধ হৃদয়ে দিতে সান্ত্বনা।” ইত্যাদি।

দীর্ঘ এক বছর (১৯১৭-১৮) জন্মসিদ্ধ কিশাের মাতৃসাধক ভবাপাগলা জগৎজননীর প্রাণবন্ত বিগ্রহ শ্রীশ্রীমা সারদামণির দিব্য সান্নিধ্য লাভ করলেন। এবার ভবাপাগলা দেশের বাড়ীতে ফিরবেন। যাবার পূর্বে শ্রীশ্রীমা সারদামণির কাছে এসে শ্রীশ্রীমায়ের স্বহস্তের একটি স্মৃতিচিহ্ন চান। মা সারদামণি তার ঘরের ভেতর

থেকে একটি গান রচনা করে কিশাের ভাবপাগলাকে দেন। শ্রীশ্রীমায়ের হাতের এই পরম পবিত্র চিহ্ন অনুপম গানটি ভবাপাগলা সারাজীবন সযত্নে রেখে দেন (আজো শ্রীশ্রীমা সারদামণির স্বহস্তে লিখিত গানটি ভবাপাগলার কালনার ভবানী মন্দিরে সুরক্ষিত রয়েছে)।

শ্রীশ্রীমা সারদামণির স্বহস্তে রচিত এই অভি দুর্লভ গানটি হ’ল –

“ব্যাথার বােঝা নামিয়ে নে মা আর পারি না বইতে তারে

দিনে দিনে ভেঙ্গে পড়ি মা মরমভাঙ্গা ব্যাথার ভরে

আছে নয়নভরা চোখের বারি পা ধােয়াবার জলের ঝারি

হা হুতাশের দীর্ঘশ্বাস মা নিত্যপূজার উপাচারে

এ হৃদয় তাপে জ্বেলে বাতি আরতি করি মা দিবা রাতি

এবার কন্ঠে তােমার দুলিয়ে দেব আমার ব্যাথার কণ্ঠহারে।”


* কিশাের ভবাপাগলা কলকাতা থেকে পূর্ববঙ্গের আমতা গ্রামে নিজের বাড়ীতে ফিরে এলেন। আবার যথারীতি গৃহদেবী তথা ইষ্টদেবী আনন্দময়ী শ্যামামাকে ভবাপাগলা তার গানের জবা দিয়ে প্রতিদিন আরাধনা করতে লাগলেন পরম আনন্দ ভরে। তার সাথে তার বাগানের জবা ফুল, পশুপাখী, নদীর কুমীর ও নানান ভক্ত মানুষকে নিয়ে কিশাের ভবাপাগলা ঘটাতে থাকেন বিচিত্র অলৌকিক সব লীলা।

এভাবে দিন কাটতে লাগলাে। ক্রমে যৌবনে পদার্পণ করলেন ভবাপাগলা। সংসার আশ্রমেও প্রবেশ করলেন। ক্রমে সারা পূর্ববঙ্গে তার নাম খ্যাতি ও সংগীতের কথা ছড়িয়ে পড়লাে। তার সাথে যথারীতি অলৌকিক কাহিনী সব। দেশ বিভাগের পর পূর্ববঙ্গ থেকে ১৩৫৭ সনের ৪ঠা ফাল্গুন তিনি বর্ধমানের অম্বিকা কালনায় এলেন। ক্রমে কালনায় তার ভবানীমন্দির গড়ে উঠলাে। নিত্য পূজিতা হতে লাগলেন আনন্দময়ী শ্যামা মা। সারা জীবনে ভবাপাগলা গান রচনা করেছেন অজস্র। এদিক দিয়ে আড়াই শত বছর পূর্বে মাতৃসাধক রামপ্রসাদের সাথে তার আত্মিক মিল রয়েছে। রামপ্রসাদ তার গানের ‘লক্ষ জবা’ দিয়ে শ্যামা মাকে আরাধনা করেছিলেন। একদিন রামপ্রসাদের ভিটে কুমারহট্ট দর্শন করবার জন্য ব্যাকুল হলেন ভবাপাগলা। কয়েকজন ভক্তসহ কুমারহট্ট (অধুনা হালিশহর) রওনা হলেন। যথাসময়ে অলৌকিকভাবেই শৃগাল ও নীলাভ শ্বেতশুভ্র গাভীর মাধ্যমে তারা পদব্রজে রামপ্রসাদের ভিটেতে এসে উপস্থিত হলেন। রামপ্রসাদের ভিটেতে জরা জীর্ণ গৃহে এক অতি বৃদ্ধা দাঁড়িয়ে আছেন। তার পরনে শতছিন্ন পােষাক ও তাঁর চেহারা কর্কশতা পূর্ণ। ভবাপাগলা ছাড়া কেউ তার দিকে ভাল করে ফিরেও তাকালেন না। ভবাপাগলার ভক্তগণ নারকেল ও মুড়ির খোঁজে আশে পাশে গেলে সেই বৃদ্ধা ভবাপাগলাকে সুমিষ্ট কণ্ঠে বললেন, রামপ্রসাদ এলি বাবা। আয়। তারপর অলৌকিকভাবে নারকেল এনে খাওয়ালেন। নানান কথা বললেন তার সাথে। ভবা আশ্চর্য হলেন কিন্তু তার সাথে নিজেও উপলব্ধি করলেন যে এই হালিশহরে রামপ্রসাদের সাধনস্থান ও ভিটেতে এসে তারও অভূতপূর্ব উদ্দীপনা ও দিব্য আনন্দ হচ্ছে। একটু পরে তার ভক্তগণ মুড়ি ও নারকেল গ্রহণ করে ফিরে এলে ভবা তাদের নিয়ে রওনা হলেন। পথে এই বৃদ্ধার প্রসঙ্গে ভবা বললেন যে এই বৃদ্ধা হলেন দেবী ধূমাবতী দশমহাবিদ্যার সপ্তম বিদ্যা। তখন ভক্তগণ অনুশােচনা করতে লাগলেন যে দেবী ধূমাবতী তথা সেই বৃদ্ধাকে ভাল করে দর্শন ও প্রণাম না করার জন্য। মাতৃসাধক রামপ্রসাদ এক লক্ষ গানের জবা দিয়ে মা

কালীকে পূজা করেছিলেন তার মহান দিব্য জীবনে। ভবাপাগলা লক্ষ গান রচনা না করলেও তার পাঁচ বছর বয়স থেকে দীর্ঘ একাশী বছর পর্যন্ত সারাজীবনে হাজার হাজার

গান রচনা করেছেন। জন্মসিদ্ধ ভবাপাগলার গানই ছিল তার নিত্য পূজা। প্রতিদিন এই গানের অর্ঘ্য রচনা করে তার প্রাণাধিক ইষ্টদেবী মা কালী তথা আনন্দময়ী ভবানীর চরণে অর্পণ করেছেন। পাঁচ বছর থেকে সুদীর্ঘ একাশী বছর অর্থাৎ দীর্ঘ ছিয়াত্তর বছর এই গানের অর্ঘ্য তিনি দিয়েছেন তার ইষ্টদেবীকে।


* সেই হিসাবে প্রতিদিন একটি করে (কোন কোন দিন একাধিক গানও রচনা করেছেন) গানও যদি তিনি রচনা করে থাকেন, তাহলে দীর্ঘ ছিয়াত্তর বছরের সংগীত সাধন জীবনে তিনি কমপক্ষে রচনা করেছেন সাতাশ হাজার সাতশাে চল্লিশটি গান। কিন্তু ভবাপাগলার মাত্র কয়েক হাজার সংগীতের সন্ধান পাওয়া গেছে। তাই নিয়ে কয়েক খণ্ডে রচিত হয়েছে ভবাপাগলার গীতিমালা। যদিও শােনা যায় তার রচিত গানের সংখ্যা প্রায় সাতাশী হাজার। ভবাপাগলার গানের বৈচিত্র্য অসাধারণ অজস্র শ্যামা সংগীত

ছাড়াও শ্রীহরি, শ্রীকৃষ্ণ, রাধাকৃষ্ণ, শ্রীরামচন্দ্র, গােবিন্দ, শিবদুর্গা, শ্রীচৈতন্য, বাউল, ভাটিয়ালী প্রভৃতি অসংখ্য ভক্তিগীতি অনবদ্য

ভাবে রচনা করেছেন। মূলতঃ সারা জীবন ধরেই তিনি তার প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন আশ্রম মন্দিরে এবং ভক্তের দ্বারে দ্বারে নাম বিলিয়ে গেছেন অকাতরে। মূলতঃ ভবাপাগলা হলেন বিশ্ব বাউল। ইষ্টদেবী মা কালী তথা তারা মায়ের ওপর তার রচিত সংগীত সকল অধ্যাত্ম জগতের মহা মূল্যবান মণিমুক্তাস্বরূপ। মূলত তাঁর সকল সংগীতই সংগীত জগতের মহা সম্পদ। তবু তার মধ্যে শ্যামা সংগীত অনন্য। যেমন, কালী কালী কালী বলে ডাকরে মন রসনা, কালী নামের প্রেম সাগরে ডুবে থাকরে কালী বলে, কালী কল্পতরু মূলে বসে থাক মন যােগাসনে, তারা বলতে তারায় যেদিন ছুটবে ওরে প্রেমের বাণ, আনন্দরূপিনী তারা (যার) রসনায়

আনন্দে, কালীনাম জপরে, যেতে হবে সবারে, কালী বলে ডাকরে মন (তাের) কালের ভয় রবে না, কাল নিবারণী তারা দিস মা সাড়া অন্তিমকালে প্রভৃতি দিব্য ভাবনামণ্ডিত সংগীত সকল। তারা মা, বামদেব, বীরভূমকে একসাথে করেও তিনি গান লিখেছেন “ক্ষ্যাপা বেটী ক্ষ্যাপার বুকে খেলছে কত যুগে যুগে কতজনা ডাকছে তাকে, যার যেমন মনে লাগে, বামাক্ষ্যাপার উপাসনায়,

কুকুরছানা সঙ্গে খেলায়, মড়ার হাড়ের কুঁড়েখানায় শ্যামা নাকি থাকতাে জেগে” প্রভৃতি। এই দিব্যোন্মাদ ব্রহ্মবিদ আনন্দময় মহাসাধকের প্রতি ভারতের বহু উচ্চকোটির সাধক সাধিকা গভীর শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। ভারতের সর্বস্তরের বিশিষ্ট জ্ঞানী, গুণী, মনীষী, শিল্পী, লেখক, অধ্যাপক, বিচারপতি প্রভৃতিগণও তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। সুদীর্ঘ ৮১ বছর ধরে ঐশীনির্দিষ্ট সকল কর্ম সুসম্পন্ন করে এই সদানন্দময় বিরাট শিশু বাংলা ১৩৯০ সনের ১৩ই ফাল্গুন

রবিবার স্থূলদেহ ত্যাগ করে ইষ্টদেবী আনন্দময়ী ভবানীর অমৃতময় কোল চিরতরে লাভ করলেন। আজো তাঁর বাণী ,তার সংগীত আকাশে বাতাশে প্রতিনিয়ত ঝংকৃত হচ্ছে। ভবা ছিলেন এই ভব সাগরের ভবার্ণব। তাই ভবে এসে ভবা সবাইকে ভাবমুখে থাকবার নামসুধা পান করালেন প্রাণভরে। তার সাথে তার ভবার্ণব থেকে দু’হাতে বিলিয়ে দিয়ে গেলেন তার সংগীতের অফুরন্ত অমৃতসুধা। আর মধুর স্বরে জানিয়ে গেলেন, ‘গানই সর্বশ্রেষ্ঠ সাধনা। উপরােক্ত কাহিনীর ব্যাপারে ভবাপাগলার অন্যতম লীলা পরিকর শ্রীগােপাল ক্ষেত্রীর কাছে লেখক আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। সংযােগের জন্য শ্রীশ্যামাপ্রসাদ মল্লিকের কাছেও লেখক কৃতজ্ঞ। 🙏🏻🙏🏻


★কৃতজ্ঞতা ও তথ্য ঋণ শ্রীযুক্ত বিপুল কুমার গঙ্গোপাধ্যায় মহাশয় ও তার স্ব হস্তে রচিত তারাপীঠ মহাপীঠ পঞ্চম খণ্ড।🙏🏻🙏🏻

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.