Type Here to Get Search Results !

   Choose Your Language   

ভীষ্মদেব কে?,তার অস্ত্রশিক্ষার গুরু কে?, ভীষ্মদেবের জন্মরহস্য কী?, Who is Bhishmadev?, Who is his weapon teacher?, What is the secret of Bhishmadev's birth?,

 ভীষ্মের অস্ত্রশিক্ষাঃ---


ভীষ্মদেবের দেহ ত্যাগ,
           Abandonment of Bhishmadev's body

 💥 ক্ষত্রিয় ভীষ্ম, পরশুরামের শিষ্য কেনো ?

 ভীষ্ম, সাধারণ মানুষের মতো জন্মান্তরের অধীন কোনো ক্ষত্রিয় ছিলেন না, গীতায় যে অষ্টবসুর কথা বলা হয়েছে, যারা আটজন দেবতা হিসেবে পরিচিত, ভীষ্ম ছিলেন সেই অষ্টবসুর একজন, তাই ভীষ্ম কোনো সাধারণ ক্ষত্রিয় নন, ভীষ্ম ছিলেন একজন দেবতা, ঘটনাচক্রে বিশেষ কারণে যিনি মানবরূপে ক্ষত্রিয় বংশে জন্ম নিয়েছিলেন। ভীষ্মের জন্মরহস্যটি এরকম-

  শ্রীকৃষ্ণ, গীতার একাদশ অধ্যায়ের ২২ নং শ্লোকে অষ্টবসুর কথা বলেছেন, এই অষ্টবসুগণ হলেন- ধর, ধ্রুব, সোম, অনল, অনিল, সাবিত্র, প্রত্যূষ ও প্রভাস। পৌরাণিক কাহিনীতে বলা হয়েছে, এই অষ্টবসু একদিন সস্ত্রীক ঋষি বশিষ্ঠের আশ্রমে যান বেড়াতে। সেখানে ঋষি বশিষ্ঠের কামধেনুকে দেখে তাদের মনে লোভ জন্মে এবং কোনো এক বসুর পরিকল্পনায় তারা, তার কামধেনুকে চুরি করে নিয়ে চলে যায়। এই ঘটনাটি ঋষি বশিষ্ঠ জানতে পেরে এই অভিশাপ দেয় যে, যারা তার কামধেনুকে চুরি করেছে, তারা শাস্তি স্বরূপ মর্ত্যে জন্ম নেবে।

    এই অভিশাপের কথা জানতে পেরে অষ্টবসু গিয়ে ঋষি বশিষ্ঠের কাছে ক্ষমা চান, তখন ঋষি বশিষ্ঠ তাদেরকে বলেন- আমার অভিশাপ অবশ্যই ফলবে এবং তোমাদেরকে মর্ত্যে অবশ্যই জন্ম নিতে হবে, কিন্তু যার বুদ্ধিতে তোমরা এই কাণ্ড ঘটিয়েছো, তাকে পৃথিবীতে দীর্ঘদিন থাকতে হবে, অন্যরা জন্মমাত্রই মুক্তি পাবে।

    এরপর অষ্টবসুর সাথে দেবী গঙ্গার দেখা হয়, তিনি তাদেরকে তাদের ক্রন্দনের কারণ জিজ্ঞেস করলে অষ্টবসুগণ সব খুলে বলে দেবী গঙ্গাকে তার গর্ভে ধারণ করে তাদের মুক্তি দানের ব্যবস্থা করতে বলেন, ফলে দেবী গঙ্গা তাদেরকে আশ্বস্ত করেন।

   এরপর দেবী গঙ্গা মানবীরূপে মর্ত্যে আবির্ভূত হলে রাজা শান্তনুর সাথে তার দেখা হয়, রাজা শান্তনু তাকে বিবাহ প্রস্তাব দিলে দেবী গঙ্গা তাকে শর্ত দেন, আমার কোনো কাজে বাধা দেওয়া যাবে না বা আমাকে কোনরকম প্রশ্ন করা যাবে না, এই শর্তে রাজী থাকলে আমি আপনাকে বিবাহ করতে পারি। এই শর্তের সুদূর প্রসারী পরিণাম চিন্তা না করেই রাজা শান্তনু, গঙ্গার প্রস্তাবে রাজী হন।

    বিয়ের এক বছর পর দেবী গঙ্গা একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন এবং তাকে গঙ্গার জলে ফেলে দিয়ে আসেন। কিন্তু তার এই কর্মে, পূর্বশর্ত মতে, শান্তনু কোনো প্রশ্ন করতে পারেন না, শুধু মনোকষ্টে দগ্ধ হন। এভাবে পরপর সাতটি পুত্রকে দেবী গঙ্গা জলে বিসর্জন দেন। কিন্তু অষ্টম পুত্রের বেলায় শান্তনু আর নিজেকে কণ্ট্রোল করতে পারেন না; তিনি, গঙ্গাকে প্রশ্ন করেন, কেনো সে একের পর এক এভাবে তার পুত্রদেরকে গঙ্গার জলে ফেলে দিয়ে হত্যা করছে ? এই প্রশ্ন করার ফলেই দেবী গঙ্গা, তার সদ্যজাত পুত্রকে নিয়ে রাজা শান্তনুকে ছেড়ে চলে যান। তারপর তিনি তার অষ্টমপুত্র দেবব্রতকে ঋষি বশিষ্ঠের কাছে বেদ অধ্যয়ণ এবং পরশুরামের কাছে অস্ত্র শিক্ষার জন্য প্রেরণ করেন এবং এরপর ৩৬ বৎসর বয়সের সময় গঙ্গা পুনরায় দেবব্রতকে, তার পিতা শান্তনুর কাছে দিয়ে যান, যেখান থেকে শুরু হয় তার মহাভারতীয় জীবন।

     জন্মগত কারণেই দেবব্রত ভীষ্মকে সাধারণ ক্ষত্রিয় হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না, যেহেতু তিনি মূলে একজন দেবতা, আর তাই ভীষ্মকে অস্ত্র শিক্ষা দিয়ে পরশুরাম তার প্রতিজ্ঞা, শুধু ব্রাহ্মণদেরকে অস্ত্র শিক্ষা দান, সেটা যে ভঙ্গ করেন নি, একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়।

🙏🏻🙏🏻হরে কৃষ্ণ 🙏🏻🙏🏻

জয় গুরু মহারাজ 🙏🏻🙏🏻

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.